বাংলা ইশারা ভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির বিষয়টি প্রক্রিয়াগত জটিলতায় আটকে আছে। ক্ষমতায় আসার পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী বক্তব্যে মৌখিকভাবে এ ভাষার স্বীকৃতি দেন। তবে এখনো তা আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়নি। এ বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নেও অগ্রগতি নেই।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করে, সরকার শ্রবণ ও বাক্প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ‘ভাষাগত পরিচয়কে সমুন্নত করার লক্ষ্যে’ ইশারা ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সে বছরের পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে তা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই দিনে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোকে এ ভাষা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠায় মন্ত্রণালয়। শ্রবণ প্রতিবন্ধীরা বলছেন, এর পর থেকে এ বিষয়ে আর বিশেষ কোনো অগ্রগতি হয়নি।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ইশারা ভাষার ব্যবহার শুরু হয়েছে। তবে এটাই যথেষ্ট নয়। দ্রুত ইশারা ভাষা দিবস পালনের জন্য প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে।’
সোসাইটি অব দি ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজার্সের সভাপতি ওসমান খালেদ দোভাষীর মাধ্যমে প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি থাকার পরও এ ভাষার স্বীকৃতির বাস্তবায়নে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। এমনকি ইশারা ভাষা দিবসের দাবিটিও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে আছে।’
কয়েকজন শ্রবণপ্রতিবন্ধী দোভাষীর মাধ্যমে প্রথম আলোকে জানান, প্রতিবন্ধিতার কারণে তাঁরা কথার মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন না। ইশারা ভাষার গ্রহণযোগ্যতার অভাবে শ্রবণপ্রতিবন্ধী নাগরিকেরা সমাজের মূলধারায় অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। তাঁরা নিজেদের অধিকারের বিষয়টিও যৌক্তিকভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। ফলে সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অবস্থার অবসানে বাংলা ইশারা ভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির কোনো বিকল্প নেই।
দেশের প্রায় ২৬ লাখ শ্রবণ ও বাক্প্রতিবন্ধীর পক্ষ থেকে পয়লা ফেব্রুয়ারিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইশারা ভাষা দিবস হিসেবে পালনের দাবি তোলা হয়েছে। কিন্তু সরকার এ আহ্বানেও এখনো সাড়া দেয়নি। শ্রবণপ্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী এ জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। এ ছাড়া সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে দিবস পালনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে।
মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইশারা ভাষাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি দিবসের মাধ্যমে পালনের প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে পাঠানো হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক না করা এবং প্রস্তাবটি পাঠানোর ক্ষেত্রে কিছু প্রক্রিয়াগত ত্রুটি থাকার যুক্তিতে মন্ত্রিপরিষদ তা ফেরত পাঠিয়েছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মির্জা তারিক হিকমত প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন আবার একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে পুনরায় মন্ত্রিপরিষদ সভায় তা উত্থাপন করা হবে।’
বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থার সহসভাপতি ফিরোজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে ইশারা ভাষা দিবস ঘোষণার মধ্য দিয়ে সরকার শ্রবণ ও বাক্প্রতিবন্ধীদের অধিকার ও মর্যাদা দানের প্রক্রিয়াটি শুরু করতে পারে। ইশারা ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারের ওপর একটি বাধ্যবাধকতাও। কেননা, সরকার জাতিসংঘ ঘোষিত প্রতিবন্ধীদের অধিকার সনদ এবং সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান অনুসমর্থন ও অনুমোদন করেছে। ওই সনদে ভাষার সংজ্ঞায় ইশারা ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে প্রশিক্ষণের অভাবে শ্রবণপ্রতিবন্ধী স্কুলের সব শিক্ষকও ইশারা ভাষা ভালোভাবে জানেন না বলে অনেকে বলেছেন। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ১৯৯৪ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বধির সংস্থা যৌথভাবে বাংলা ইশারা ভাষার অভিধান প্রকাশ করে। সরকারি পর্যায়ে ইশারা ভাষা শিক্ষায় এরপর আর বড় কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দুই বছর আগের সর্বশেষ সরকারি নির্দেশনার পরও এখনও শুধু বিটিভির দুপুর দুইটা ও বিকেল পাঁচটার খবর এবং বেসরকারি টেলিভিশন দেশ টিভির সন্ধ্যা সাতটার খবরে ইশারা ভাষা ব্যবহার করা হয়। বিটিভির রাত আটটার মূল সংবাদ বুলেটিন বা অন্য টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদে এ ভাষার ব্যবহার হচ্ছে না। ১৯৯৫ সালের প্রতিবন্ধীবিষয়ক জাতীয় নীতিমালাতেই শ্রবণসহ অন্য প্রতিবন্ধীদের জন্য বিটিভি ও অন্যান্য জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্রে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের কথা বলা হয়েছিল।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করে, সরকার শ্রবণ ও বাক্প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ‘ভাষাগত পরিচয়কে সমুন্নত করার লক্ষ্যে’ ইশারা ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সে বছরের পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে তা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই দিনে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোকে এ ভাষা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠায় মন্ত্রণালয়। শ্রবণ প্রতিবন্ধীরা বলছেন, এর পর থেকে এ বিষয়ে আর বিশেষ কোনো অগ্রগতি হয়নি।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ইশারা ভাষার ব্যবহার শুরু হয়েছে। তবে এটাই যথেষ্ট নয়। দ্রুত ইশারা ভাষা দিবস পালনের জন্য প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে।’
সোসাইটি অব দি ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজার্সের সভাপতি ওসমান খালেদ দোভাষীর মাধ্যমে প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি থাকার পরও এ ভাষার স্বীকৃতির বাস্তবায়নে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। এমনকি ইশারা ভাষা দিবসের দাবিটিও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে আছে।’
কয়েকজন শ্রবণপ্রতিবন্ধী দোভাষীর মাধ্যমে প্রথম আলোকে জানান, প্রতিবন্ধিতার কারণে তাঁরা কথার মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন না। ইশারা ভাষার গ্রহণযোগ্যতার অভাবে শ্রবণপ্রতিবন্ধী নাগরিকেরা সমাজের মূলধারায় অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। তাঁরা নিজেদের অধিকারের বিষয়টিও যৌক্তিকভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। ফলে সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অবস্থার অবসানে বাংলা ইশারা ভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির কোনো বিকল্প নেই।
দেশের প্রায় ২৬ লাখ শ্রবণ ও বাক্প্রতিবন্ধীর পক্ষ থেকে পয়লা ফেব্রুয়ারিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইশারা ভাষা দিবস হিসেবে পালনের দাবি তোলা হয়েছে। কিন্তু সরকার এ আহ্বানেও এখনো সাড়া দেয়নি। শ্রবণপ্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী এ জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। এ ছাড়া সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে দিবস পালনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে।
মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইশারা ভাষাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি দিবসের মাধ্যমে পালনের প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে পাঠানো হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক না করা এবং প্রস্তাবটি পাঠানোর ক্ষেত্রে কিছু প্রক্রিয়াগত ত্রুটি থাকার যুক্তিতে মন্ত্রিপরিষদ তা ফেরত পাঠিয়েছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মির্জা তারিক হিকমত প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন আবার একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে পুনরায় মন্ত্রিপরিষদ সভায় তা উত্থাপন করা হবে।’
বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থার সহসভাপতি ফিরোজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে ইশারা ভাষা দিবস ঘোষণার মধ্য দিয়ে সরকার শ্রবণ ও বাক্প্রতিবন্ধীদের অধিকার ও মর্যাদা দানের প্রক্রিয়াটি শুরু করতে পারে। ইশারা ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারের ওপর একটি বাধ্যবাধকতাও। কেননা, সরকার জাতিসংঘ ঘোষিত প্রতিবন্ধীদের অধিকার সনদ এবং সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান অনুসমর্থন ও অনুমোদন করেছে। ওই সনদে ভাষার সংজ্ঞায় ইশারা ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে প্রশিক্ষণের অভাবে শ্রবণপ্রতিবন্ধী স্কুলের সব শিক্ষকও ইশারা ভাষা ভালোভাবে জানেন না বলে অনেকে বলেছেন। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ১৯৯৪ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বধির সংস্থা যৌথভাবে বাংলা ইশারা ভাষার অভিধান প্রকাশ করে। সরকারি পর্যায়ে ইশারা ভাষা শিক্ষায় এরপর আর বড় কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দুই বছর আগের সর্বশেষ সরকারি নির্দেশনার পরও এখনও শুধু বিটিভির দুপুর দুইটা ও বিকেল পাঁচটার খবর এবং বেসরকারি টেলিভিশন দেশ টিভির সন্ধ্যা সাতটার খবরে ইশারা ভাষা ব্যবহার করা হয়। বিটিভির রাত আটটার মূল সংবাদ বুলেটিন বা অন্য টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদে এ ভাষার ব্যবহার হচ্ছে না। ১৯৯৫ সালের প্রতিবন্ধীবিষয়ক জাতীয় নীতিমালাতেই শ্রবণসহ অন্য প্রতিবন্ধীদের জন্য বিটিভি ও অন্যান্য জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্রে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের কথা বলা হয়েছিল।
0 comments:
Post a Comment